অপ্রিয় হলেও সত্য : সচেতনতার বিকল্প নাই !

digitalsomoy

অপ্রিয় হলেও সত্য : সচেতনতার বিকল্প নাই

আমি আপনিসহ দেশের মানুষ একপ্রকার গৃহবন্দী। কি এক অদৃশ্য শক্তি আমাদের যেন নিরবে শায়েস্তা করছে।একদিকে শিল্প- কলকারখান, পরিবহন, সরকারি, বেসরকারি অফিস  বন্ধ অন্যদিকে গত বছরের ১৭ মার্চ হতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি পুনরায় ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা করলে ধ্বংসের পথে মনে হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত দিন টিকার দোহাই দিয়েছিলো এখন টিকা এসে গেছে কিংবা আসার পথে আছে এতএব , শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো না খোলার কোনো যুক্তি নেই।  আমাদের আশা, টিকা  এসে গেছে , দয়া করে এবার শিক্ষার  বন্ধ দুয়ার খোলা হোক। করোনায়  যখন আমাদের এই অবস্থা তাঁর উপর ডেঙ্গু । ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন ‘ দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে নতুন সংকট ডেঙ্গু । সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষ ২ হাজার ৪২৬। মৃত্যু ৪ জন। বিএসএমএমইউ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন দৈনিক ১৫ থেকে ২০টি প্লাটিলেটের সরবারহ হচ্ছে । বেশির ভাগই নেওয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীর জন্য।

ডেঙ্গু নিয়ে  কীট বিশেষজ্ঞরা অনেক আগেই সতর্ক করেছিলেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এডিসের ঘনত্ব আগের বছরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। জানিয়েছিলেন ঢাকার সব এলাকা ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। দ্রুত এর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কোভিড-১৯ নিয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্টরা বেশি উদ্বিগ্ন ছিলো। যার ফলে অন্যান্য রোগের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি।  এটি ডেঙ্গু বাড়ার একটা বড় কারণ। তাঁর মানে সেই একচক্ষু হরিণের গল্প। বাঘের দিকে নজর দেবে, না কুমিরের দিকে তাকিয়ে থাকবে, নাকি ঘাস খাবে? ডেঙ্গু , চিকুনগুনিয়া সম্পর্কে সকলেই জানেন যেহেতু এটি পুরাতন রোগ। এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের কলকাঠি সংশ্লিষ্টদের ছিলো। তাহলে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না ? কেন  এত গাফিলতি ? এটি নাগরিক সমাজের মনের কথা। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার পাশাপাশি আছে কালাজ্বর। করোনাকালের শুরুর আগে থেকেই প্রায় ২ বছর হলো কালাজ্বরের বাহক বেলে মাছি নিধনে সরকারের কোনো কার্যক্রম নেই।

এইসব রোগের বড় একটি অংশ শিশু। শিশুরা তারা তাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সচেতন না হওয়ায় তাদের ওপর রোগের প্রভাব দেখা যায় বেশি। তাই তাঁদের মা-বাবাকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন।  এডিস পরিস্কার পনির মশা, ঘরের মশা, দিনে কামড়ানো মশা। করোনাকালে শিশুরা এখন ২৪ ঘন্টা ঘরবন্দী। নিজেরেদর ঘর-বারান্দা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলেও পাশের খালি ফ্ল্যাট আর সেটির বারান্দায় ফেলে দেওয়া টবে বৃষ্টির পানি জমে এডিসের বংশবিস্তার হচ্ছে। শিশুদের বাড়ির পোশাক এই গরমে গেঞ্জি, হাফপ্যান্ট । ফলে এ এডিস মশার সহজ শিকার হচ্ছে শিশুরা। তাই ডাক্তারদের মতে তারা যেন ফুলহাতা শার্ট  পরে হাত দুটো ডেকে রাখে।  শিশুরা দিনে ঘুমালেও মশারি টাঙিয়ে দিতে হবে। মশানিরোধক ক্রিম ব্যবহার করাতে পারে। গ্রামে মায়েরা শিশুদের নিশিন্দা পাতার রস লাগিয়ে  দেয়। এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।

করণীয়:

জ্বরের উপসর্গ থাকলেই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু টেষ্ট করাও জরুরি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি খোলাসা করে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া জরুরি। রেডিও- টেলিভিশনে সেগুলো ঘন ঘন প্রচার করলে মানুষের ভোগান্তি কমবে । বর্তমানে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞাপন মানুষের সচেতনতায় বড় কাজে আসছে।

আসুন, আমরা সচেতন হই , আর সচেনত করি অন্যদেরও। আমার সচেতনতামূলক এই লিখা কারো অপ্রিয় হলেও সত্যটা আমি বলেছি আশা করি বিরক্তিকর মনে করবেন না। ধন্যবাদ।

লেখক : মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া

ডেপুটি ম্যানেজার (সার্টিফিকেশন)

ক্যাশ ইনসেনটিভস বিভাগ, বেসিস