দেশের ফাইভজি সম্প্রসারণে প্রযুক্তি একসঙ্গে কাজ করবে টেলিটক ও হুয়াওয়ে

digitalsomoy

বাংলাদেশে ফাইভজি চালু করতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিকম অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশে লিমিটেড সহযোগী হিসেবে নির্বাচিত করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়েকে। আগামী ১২ই ডিসেম্বর ২০২১ থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে বাংলাদেশে ফাইভজি চালু করা হবে এবং এই নেটওয়ার্ক স্থাপনে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ টেলিটককে অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা করবে।

হুয়াওয়ে উচ্চমানের চিপ সেট, অ্যালগরিদম এবং পণ্যের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ফাইভজি প্রযুক্তিতে শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। ফাইভজি প্রযুক্তি সেবাদানের বিষয়ে এ বছরের অক্টোবর মাসে টেলিটকের সাথে হুয়াওয়ে একটি চুক্তি করে।  এই চুক্তির অধীনে, হুয়াওয়ে বাংলাদেশে ফাইভজি প্রযুক্তি চালু করার ক্ষেত্রে টেলিটককে বিশ্বমানের সেবা প্রদান করবে।

২০১২ সাল থেকে গবেষণার ও উন্নয়নের মাধ্যমে অত্যন্ত কার্যকরী হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার অ্যালগরিদম তৈরি করেছে যা অপারেশনের ব্যয় কমানোর পাশাপাশি দ্রুতগতির ফাইভজি প্রযুক্তি প্রদানে সক্ষম। বাংলাদেশে ফাইভজি চালু করার ক্ষেত্রে হুয়াওয়ে টেলিটককে তার উচ্চমানের RAN ইউনিট প্রদান করবে। এর মধ্যে AAU (অ্যাকটিভ অ্যান্টেনা ইউনিট) যা ফাইভজি যুগে টেলিটক নেটওয়ার্কের কার্যকারিতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। হুয়াওয়ের 64T64R MIMO AAU প্রযুক্তির একটি কার্যকারিতা হল এটি বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি সাইটে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাবে এবং দমকা হাওয়ার চাপেও নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করবে।

এরই মধ্যে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন সাইটে হুয়াওয়ে ও টেলিটকের যৌথ পরীক্ষায় ব্যবহারকারীদের জন্য এক দশমিক পাঁচ জিবিপিএস পিক ইন্টারনেট গতি এবং ৭~১০ মিলিসেকেন্ড ল্যাটেন্সির মত দারুণ ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। ভবিষ্যতে, বাংলাদেশে শিল্পের ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য এই গতিকে কাজে আরও অনেক সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে।

হুয়াওয়ে বাংলাদেশের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার কেভিন স্যু বলেন “ফোরজি মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে, ফাইভজি বদলে দেবে সমাজ। এবং সেই যাত্রার অংশ হতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশে ফাইভজি নেটওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে আমরা টেলিটকের সাথে অংশ নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা টেলিটকের এই প্রথম ফাইভজি সাইটগুলির মধ্যে ৬৫ শতাংশেরও বেশি সাইটে আমরা প্রযুক্তি প্রদান করছি। একটি সম্পূর্ণভাবে কানেক্টেড ও ইন্টেলিজেন্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশে হুয়াওয়ে রয়েছে এবং আমরা দায়িত্বের সাথে এই অগ্রযাত্রায় অংশগ্রহণ করে যাব।“

উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে ফাইভজির গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে হুয়াওয়ে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ফাইভজি পণ্য উন্নয়নে প্রায় এক দশমিক চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২০ সালে হুয়াওয়ে মাইনিং, উৎপাদন, সমুদ্র বন্দরসহ বিভিন্ন খাতে পাঁচ হাজারের বেশি ফাইভজি টেস্ট পরিচালনা করেছে এবং এক হাজারের বেশি বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।  

হুয়াওয়ে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মোট সাতশ’ টেলিকম অপারেটরের সাথে কাজ করছে এবং হুয়াওয়ের সহায়তায় ১৮৪টি অপারেটরের মধ্যে ৮৪টি অপারেটর ফাইভজি সেবা উন্মোচন করেছে।