খুলনার সেই মরিয়ম মান্নানের মাকে জীবিত উদ্ধার

digitalsomoy

খুলনার আলোচিত সেই নিখোঁজ রহিমা বেগমকে ২৯ দিন পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে  জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

রাত আড়াইটার দিকে তাকে খুলনার দৌলতপুর থানায় আনা হয়। খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা। পরে আর ঘরে ফেরেননি তিনি। অন্যদিকে স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। এ সময় একই দিন রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।

এদিকে রহিমা বেগমের ছয় সন্তান সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াহাব জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) একটি দল বোয়ালমারী পৌরসভাধীন সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। পরে রাতেই খুলনার পুলিশ রহিমাকে নিয়ে খুলনা উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। এর বেশি কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানানো সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো.মাসুদুর রহমান ভূঞা বলেন, শনিবার রাতে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন।

এর আগে এ বিষয়ে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন করে তার মাকে উদ্ধার করার কথা জানানো হয়েছে।

এর আগে নিখোঁজ মাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মরিয়ম মান্নান। সর্বশেষ তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ফেসবুকে তার মায়ের লাশ পাওয়া গেছে বলে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় পৌঁছান। সেখানে দাফন হওয়া লাশের জব্দকৃত পোশাক দেখে মরিয়ম মান্নান তার মায়ের লাশ বলে দাবি করেন।

পুলিশ জানায় কেবলমাত্র ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ওই লাশ তার মায়ের কিনা তা জানা সম্ভব। ইতিমধ্যেই মরিয়ম মান্নান ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেছেন। 

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন।