সংসদ নির্বাচন : এনআইডিতে লাগবে ১০ আঙুলের ছাপ

digitalsomoy

বছর খানিক বাকি আছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের। সেই ভোট নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন চায় আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ১০ আঙুলের ছাপ লাগবে ভোটারদের। যেসব ভোটারের ১০ আঙুলের ছাপ দেওয়া হয়নি আগামী জানুয়ারি থেকে তাদের আঙুলের ছাপ নিবে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি বিভাগ।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এনআইডির ডিজি এ কে এম হুমায়ূন কবীর তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

হুমায়ূন কবীর বলেন, আগামী জাতীয় সংসদে নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট আপডেট করবে ইসি। জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) যাদের চার আঙুলের ছাপ দেওয়া আছে, তাদের পুনরায় ছাপ দিতে হবে। তবে যারা স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করার সময় দশ আঙুলের ছাপ দিয়েছেন, তাদের আর দিতে হবে না।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদে নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট আপডেট করবে ইসি। যারা দশ আঙুলের ছাপ দেননি তাদের আগামী জানুয়ারি থেকে আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এবার সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে ইসি।

নির্বাচনী রূপরেখার অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন রুটিন ওয়ার্ক হচ্ছে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ করা। ভোটার তালিকা প্রণয়নের অংশ হিসেবে সংস্থাটি ভোটারদের দুই হাতের ১০ আঙুলের ছাপ নেবে।

এদিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে ইসি। ওই অনুষ্ঠানে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে।

ইভিএমের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে ইসি দাবি করে, বায়োমেট্রিক যাচাই করে ভোট দেওয়ার সিস্টেম থাকায় জাল ভোট অর্থাৎ একজনের ভোট অন্যজনের দেওয়ার সুযোগ নেই। একই ইভিএম বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে ব্যবহার করা হয় বিধায় প্রোগ্রামের জালিয়াতি করা সম্ভব নয়। ওয়ান টাইম চিপস ব্যবহার ও এমবেডেড পার্টস থাকায় একইসঙ্গে একজন ভোটার একাধিক ভোটও দিতে পারে না। বিল্ট ইন ঘড়ি থাকায় নির্বাচন সময় আরম্ভ হওয়ার আগেও ভোট দেওয়া যায় না, একইভাবে সময় শেষ হলে প্রিজাইডিং অফিসার বন্ধ বাটনে চাপ দিলে এরপরে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।

ভোট গণনার সময় খুব বেশি কার্যকরী এই যন্ত্র। বাটনে চাপ দিলেই ফলাফল পাওয়া যায়। ব্যালটে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করে ভোটের আগে পরে ইচ্ছামত বাক্সে ব্যালট ভর্তি করা সম্ভব কিন্তু ইভিএমে এ ধরনের অন্যায় করার কোনো সুযোগ নেই।

সেই সময় ইভিএমের উপকার দাবি করে বলা হয়, ভোটাররা সফলভাবেই ইভিএমে ভোট দিতে সক্ষম। আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটারদের সমস্যা হলেও ভোট দিতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। ইভিএম ভোট যেমন সুষ্ঠু ও সঠিক হয় তেমনি কোন প্রকার জাল-জালিয়াতির সুযোগ থাকে না বলে ইসি দাবি করে।

ইসি রোডম্যাপে উল্লেখ করেছে, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সংলাপে অংশগ্রহণকারী ২৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে ১৭টি রাজনৈতিক দল। বিপক্ষে মত দিয়েছে ১২টি দল।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বরে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী নভেম্বর থেকে জানুয়ারির ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা ২০২৪ সালে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ নির্বাচন করার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন।