বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী নিপুণ আক্তারের করা এক রিট আবেদনে সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজলকে বিজয়ী ঘোষণার ফলাফল স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শুধু তাই নয়; চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনা তদন্তের জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
আদালতের এই আদেশের সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন রিটকারী চিত্রনায়িকা নিপুণ।
আদালতের এসব আদেশের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
ঢাকাই সিনেমার এ মুভিলর্ড মনে করেন, চিত্রনায়িকা নিপুণের পেছনে বড় শক্তি আছে। যে কারণে তিনি বারবার এমনটা করতে পারছেন।
তার কথায়, ‘এটার পেছনে অবশ্যই বড় শক্তি আছে। যেহেতু দেশের বাইরে থেকে সে (নিপুণ) এসব করছে সেহেতু বুঝতে হবে তার পেছনের হাত লম্বা। ’
নিপুণের এমন সব আচরণে সিনিয়র শিল্পীরাও কষ্ট পেয়েছেন বলে দাবি করলেন ডিপজল।
তিনি বলেন, ‘সোহেল রানা ভাইসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিল্পীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারও বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত। এই দুই বছরে যে নোংরামি হয়েছে এর আগে এমন নজির নেই। বাংলাদেশের ফিল্মের মানুষ এমনটা করতে পারেন না। আমার মনে হয়, যারা হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশে আনার জন্য পাঁয়তারা করছেন এটা তারই একটা অংশ হতে পারে। ’
আদালতের আদেশের বিষয়ে ডিপজল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্ট যেহেতু রায় দিয়েছেন এখানে কিছু বলার নাই। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে দুই এক দিনের মধ্যে আমরা চেম্বার জজ আদালতে যাব। ’
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মিশা সওদাগর (২৬৫ ভোট)। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল (২২৫ ভোট)। ১৭ ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়েছেন নিপুণ আক্তার (২০৯ ভোট)।
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর ডিপজল ও মিশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন নিপুণ। মিশা ও ডিপজল তাদের গলায় পরিয়ে দেওয়া মালা নিপুণকে পরিয়ে দেন।
তবে ফুলের মালা দিয়ে বরণের ২৫ দিন পর এবারের নির্বাচিত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নিপুণ।
এর পরই ডিপজল ও মিশা সওদাগরকে মূর্খ আখ্যা দিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন এ নায়িকা।
এর আগের ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনও নিপুণের নানান অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল ও উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল মামলা।
সে সময় এই সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েই চিত্রনায়ক জায়েদ খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান নিপুণ।
তখন প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগে আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে এবং নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন।
ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জায়েদ খান হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিপুণ সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।