বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে অধিকতর স্বচ্ছতা, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়ন, মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য সৌদি সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি সরকার।
বুধবার (২৯ মে) সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান তার কার্যালয়ে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান মো. আবুল হাসান মৃধার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও ওয়ার্কশপে আলোচনায় এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাই সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম ও কাজের প্রতি আন্তরিকতার কারণেই সৌদি শ্রমবাজারে তাদের চাহিদা বাড়ছে।
সহকারী উপমন্ত্রী বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে তাতে বাংলাদেশের বিশাল এই জনশক্তি সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বলে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।
তিনি বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের তাদের গৃহীত বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমের সঙ্গে পরিচিত করতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন।
ওয়ার্কশপে বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমে কি কি সুবিধা সুবিধা রয়েছে এবং তা থেকে প্রবাসী কর্মীরা কিভাবে সেসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে উপকৃত হতে পারেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সভায় সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও তাদের দেখভালের জন্য মিশন উপপ্রধান দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কাজ ও ইকামার নিশ্চয়তাসহ ভিসা ইস্যুকরণ, চুক্তি শেষে নারী কর্মীদের ফেরত প্রেরণ, ইকামার মেয়াদ শেষ হওয়া কর্মীদের দ্রুত দেশে প্রত্যাবর্তন এবং মুসানিদ সিস্টেমে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সির অভিযোগ নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সৌদি আরবের সহযোগিতা কামনা করেন।
ওয়ার্কশপে সৌদি সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে সহকারী উপমন্ত্রী আরও জানান সৌদি শ্রম বাজারে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সৌদি সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
শ্রমিকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি ১২০০ শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা ২০২৩ সালে প্রায় ১০ লাখ অভিযোগের সমধান করেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, সৌদি সরকার দেশটিকে একটি আধুনিক শ্রমবান্ধব দেশে উন্নীত করতে শ্রমিকদের নিয়োগসহ পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশন করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের গৃহীত এসব উদ্যোগে বাস্তবায়নে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করলে হাসান মৃধা বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এছাড়াও তিনি শ্রমিকদের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারন করতে অনুরোধ জানালে সহকারী উপমন্ত্রী সহমত প্রকাশ করেন।
ওয়ার্কশপে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সিলর (শ্রম) মুহাম্মদ রেজায়ে রাব্বী, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং দ্বিতীয় সচিব (প্রেস) আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন।