প্রথমবার নিট রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২ জুলাই পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের চুক্তি বাস্তবায়নে জুন পর্যন্ত নিট রিজার্ভকমপক্ষে ১৪.৭ বিলিয়ন ডলার রাখার শর্ত ছিল। সে শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক লিখিতভাবে জানান, ‘২ জুলাই পর্যন্ত নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে নিট রিজার্ভ গণনা করা হয়। গ্রস বা মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ জানা যায়।
নিট রিজার্ভের তথ্য এর আগে কখনোই প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে গণমাধ্যম বিশ্বস্ত সূত্রে বের করে লিখে আসছে এতদিন। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদনের পর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থাটি ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজ অনুমোদনের পর এই প্রথমবার বাংলাদেশ আইএমএফ-এর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করল।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘পলিসি রেট বা রেপো সুদহার বাড়ায় অর্থনীতিতে এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কারণ, কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছে। জুনেও কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। তবে আমদানি ব্যয় সংকোচন করে রিজার্ভ ধরে রাখলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তাই আমদানি ব্যয় সংকোচন করা ঠিক হবে না। এতে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় যাতে কষ্ট না হয়, সেদিকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নজর দিতে হবে।’
চুক্তির আওতায় আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার ২৭ জুন হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ। তার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া, আইবিআরডি (ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ও আইডিবি (ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) থেকে মোট ৯০০ মিলিয়ন ডলার ছাড় হয়েছে। সব মিলিয়ে ২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে রিজার্ভে। তাতে বাংলাদেশের রিজার্ভ গ্রস হিসাবে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।