বেসিস নির্বাচন ২০২১: কেমন নেতৃত্ব চান সদস্যরা  

digitalsomoy

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০১৮-২০২০-এর মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির সময় শেষ। আগামী ২২ মে নতুন মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেকোন সংগঠনের নির্বাচন মানেই সদস্যদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে কে বা কারা হবেন নতুন মেয়াদে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। নির্বাচনের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে থেকেই সদস্যদের মধ্যে এই বিষয়ে শুরু হয়ে যায় নানান জল্পনা-কল্পনা, চুলচেরা বিশ্লেষণসহ আলোচনা-সমালোচনা। তেমনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠন হিসেবে বেসিসের সদস্যরা এর থেকে পিছিয়ে নেই। বেসিস নির্বাচন নিয়ে বরাবরের মতো এবারও তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আগ্রহের শেষ নেই।

এবারে অনুষ্ঠেয় বেসিস নির্বাচন ২০২১ ভাবনা নিয়ে দৈনিক ডিজিটাল সময়ের সাথে কথা বলেছেন কয়েকজন সচেতন ও সক্রিয় সদস্য। আলাপকালে জানালেন নির্বাচন নিয়ে নিজেদের ভাবনা-চিন্তা ও গঠনমূলক মতামত এবং প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ। আলোচনায় উঠে এসেছে সদস্যরা বেসিসের নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চান, কেমন প্রার্থী আসা উচিত, প্রাণের সংগঠন হিসেবে বেসিসকে কীভাবে দেখতে চান, বেসিসের নেতৃত্বে ধরনটা কেমন হতে হবে, সদস্যদের উন্নয়নে কী কী করা যেতে পারে, বেসিসকে  আরো গতিশীল করতে নতুন বোর্ডের সদস্যরা কী কী করতে পারেন ইত্যাদি নানান বিষয়। সদস্যদের মতামতগুলো ডিজিটাল সময়ের পাঠকদের জন্য এখানে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো।

রিটস ব্রাউজারের উদ্ভাবক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল মাজিদ

বেসিসের একজন সচেতন ও সক্রিয় সদস্য হিসেবে নির্বাচনী ভাবনা সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ইন্টারনেট রিটস ব্রাউজারের উদ্ভাবক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল মাজিদ ডিজিটাল সময়কে বলেন,  আমাদের সদস্যদের জন্য নির্বাচন হচ্ছে একটা আনন্দের‌ বিষয়। বেসিসের ফ্যামেলি ডে ছাড়া এই একটা দিনই আমরা সবাই উৎসবমুখর থাকি। এই দিন আমরা আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যত নিয়ে যারা ভাবেন, কাজ করতে চান ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সেই যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচন করে থাকি। আমাদের দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সঠিক ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচন করতে হবে। কেননা একজন দক্ষ ও যোগ্য নেতাই পারেন একটা প্রতিষ্ঠানকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে, আইসিটি ইন্ডাস্ট্রিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে। আর এ ক্ষেত্রে একজন সদস্যের  ৯টি ভোট আমাদের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।

বেসিসের গতিশীলতার জন্য এবারের নির্বাচন কেন জরুরি এমন প্রশ্নে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রেইজ আইটি সলিউশনস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু  নির্বাচিত বেসিস পরিচালকরা স্বেচ্ছাসেবক হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করেন, তাই তাদের কাজের গতিশীলতা বাড়াতে মূল্যায়ন আবশ্যক। সেই মূল্যায়ন নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব। আমি মনে করি, নির্বাচন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের ইন্ডাস্ট্রির গতি ত্বরাণ্বিত করার জন্য আমাদের সবার ভোটে অংশগ্রহণ জরুরি।

বেসিস-এর বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান

নির্বাচনী ভাবনা সম্পর্কে বেসিস-এর বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, দেখেন নির্বাচন, নির্বাচনের নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে। এটা সবার জন্য ভাবনার বিষয় এবং এটা নিয়ম অনুযায়ী হওয়া দরকার। আর সে অনুযায়ীই হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবেন তাদের মধ্য থেকে যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে সেটাই আমার প্রত্যাশা।

বেসিসের গতিশীলতার জন্য এবারের নির্বাচন কেন জরুরি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব সময়, যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সবই নির্বাচন জরুরি ছিল। সে জন্য এবারেরটাও জরুরি। এই সময়ের জন্য  যেহেতু আমাদের মেয়াদ শেষ, এখন নতুন মেয়াদে নতুন নেতৃত্ব আসবে এবং এখন যেহেতু সরকারি-বেসরকারি সব খাতে প্রচুর ডিজিটাইজেশনের কাজ হচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তাই এবারের নির্বাচন খুব জরুরি। কেননা এসব কার্যক্রমকে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে, নেতৃত্ব দিতে হবে।

স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা খান

এবারের বেসিস নির্বাচন নিয়ে ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেসিসের একজন সচেতন সদস্য রেজওয়ানা খান ডিজিটাল সময়কে বলেন, যেকোন সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। বেসিস আমাদের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ একটা বাণিজ্যিক সংগঠন। আইসিটি ইন্ডাস্ট্রিতে আরো যে কয়টা বাণিজ্যিক সংগঠন রয়েছে যেমন, বিসিএস, বাক্কো, ই-ক্যাব এসবকে সাথে নিয়ে কাজ করে নেতৃতত্বে শীর্ষে থাকতে হবে বেসিসকে। এর জন্য আমার মতে, এই ইন্ডাস্ট্রিকে  যারা নেতৃত্ব দিতে সক্ষম, যারা যোগ্য, যাদের দক্ষতা রয়েছে তারাই শুধুমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। নির্বাচিত হয়ে যদি সদস্যদের কল্যাণে দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারেন, যেকোন জাতীয় সমস্যায় সদস্যদের পাশে দাঁড়াতে না পারেন এমন ব্যক্তি নির্বাচনে না আসাই ভাল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত বছরজুড়ে করোনা মহামারীকালে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) যেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সে দিক থেকে বেসিস তেমন আশানুরূপ কোন আউপুট দেখাতে পারেনি। এসব জায়গাতে বেসিসের নেতৃত্বকে ধরে রাখতে হবে। বেসিস তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যে শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠন সেটা তার কাজে প্রমাণ করতে হবে। 

একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে বেসিসের কাছে থেকে প্রত্যাশা সম্পর্কে স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের প্রধান এই নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, শুধু মাত্র কোম্পানী খোলার জন্য যে কাউকে বেসিস সদস্য হবে তা তো না। মানসম্পন্ন সার্ভিস দিলে তাহলেই তো সংগঠনে যুক্ত হবে মানুষ। মানুষ প্রয়োজনে সংগঠনে যুক্ত হয়। আর সমস্যার সময় যদি সংগঠনকে পাশেই না পায় তাহলে সংগঠনে থেকে কি লাভ? এই জায়গাগুলোতে  বেসিসের নেতৃত্বকে আরো গতিশীল করতে হবে। সদস্যদের সাথে যোগযোগ, সার্বিক ব্যবস্থাপনা, সর্বোপরি পুরো আইটি ইন্ডাস্ট্রিকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম এমন ব্যক্তিদের নির্বাচনে আসা উচিত। বেসিসের মূল যে বিষয় নিয়ে কাজ করে, বিশেষ করে সফটওয়্যার খাত, এই সফটওয়্যারকে নিয়ে এক্সপার্ট ব্যক্তিত্বদের নেতৃত্বে আসা দরকার। তাহলে তারা আমাদের প্রয়োজনগুলো বুঝবেন, যেকোন সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারবেন।

নির্বাচনে কে বা কারা অংশগ্রহণ করবেন, আর কে করবেন না এ বিষয়ে তিনি তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বেসিসের নেতৃত্বে প্রবীণদের পাশাপাশি তরুণরাও আসবেন। তবে তাদের মধ্যে  ইন্ডাস্ট্রিতে যারা নিজেদের একটা জায়গায় তৈরি করেছেন, সফল উদ্যোক্তা, ব্যবসা বুঝেন, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এমন উদ্যোক্তাদের নেতৃত্বে আসা উচিত। যেমন, দেশীয় উদ্যোগ পাঠাও ও সেবা। তারা একটা জায়গায় পৌঁছেছে। তারা নতুনদের শেখাতে পারবেন। তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সংগঠনের যারা নতুন তাদের সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করতে পারবেন। এমন সদস্যরা নেতৃত্বে আসলে ভাল। আর তরুণ ও অভিজ্ঞদের সংমিশ্রণে যেকোন প্যানেল হলে সংগঠনের পরিচালনায় একটা আলাদা গতি আসবে।  

সংগঠনের গতিশীলতা বাড়াতে সিনিয়র ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সদস্যদের নেতৃত্বে আসাটা জরুরি বলে মনে করেন সচেতন এই সদস্য।  তিনি বলেন, আমি চাই এবারের নিবার্চনে সিনিয়র ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ভাল কেউ আসুক যে বেসিসের হালটা ধরতে পারবেন। সেইসাথে বেসিসকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন। গাইডেন্সের বিষগুলো যেন আরো জোরদার হয়। কেননা কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সাধারণ সদস্যদের যোগাযোগে একটা দূরত্ব রয়েছে। যেকোন সমস্যায় সদস্যরা যাতে দ্রুত সমাধান পেতে পারেন সেক্ষেত্রে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়াটা সময়ের দাবি।

বেসিস সেক্রেটারিয়েটের সার্ভিসের প্রশংসা করে রেজওয়ানা খান বলেন, বর্তমান সেক্রেটারিয়েটটা ভাল সার্ভিস দিচ্ছে। সেক্রেটারিয়েটের সার্ভিস ভাল হলে কি হবে, পলিসি লেভেলে তো বোর্ড গিয়ে বসে। নীতিনির্ধারণী সব সিদ্ধান্ত তো বোর্ডই নিয়ে থাকে। তাই বোর্ডকে আরো ডায়নামিক ও আপডেটেড হতে হবে।

ই-সফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হাসান অপু

বেসিসের গতিশীলতার জন্য এবারের নির্বাচন কেন জরুরি জানতে চাইলে বেসিসের একজন সচেতন সদস্য এবং  ই-সফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হাসান অপু বলেন, বেসিস আমাদের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ একটা বাণিজ্যিক সংগঠন। এই সংগঠনের কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পর্যায়ক্রমে নতুন নেতৃত্ব দরকার হয়ে থাকে। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের নিয়মে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণত নতুন কার্যনির্বাহী পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হয়।  ইতোমধ্যেই ২০১৮-২০২০ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগামী ২২ মে নতুন মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাণিজ্যিক শীর্ষ সংগঠনটির গতিশীলতা বাড়াতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তরুণ ও সিনিয়র সদস্যদের নেতৃত্বে আসার কথা জানিয়েছেন বেসিসের সাবেক এই পরিচালক। তার মতে,  নতুন বোর্ডে নতুন ও পুরান অভিজ্ঞতাসম্পন্ন  সদস্য থাকলে সংগঠনে কাজের গতি বাড়বে। আর যে বা যারাই আসুক না কেন তাদেরকে কয়েকটি বিষয়ে কাজ করার মতো মন-মানসিকতা নিয়ে আসতে হবে। এগুলো হলো-

বোর্ডের নেতারা সংগঠনের পলিসি লেভেলে কাজ করে থাকেন। তাই সংগঠনটির গতিশীলতা বাড়াতে তাদের সদস্যদের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন, আমাদের  বেসিস সদস্যদের অনেক গুণগতমানসম্পন্ন  সফটওয়্যার কোম্পানি রয়েছে। এসব দেশীয় কোম্পানিগুলো ইন্ডাস্ট্রিতে ভালমানের প্রোডাক্ট সার্ভিস দিচ্ছে। সদস্যদের কোম্পানির তৈরিকৃত যেসব টেকনোলজি ও অ্যাপ্লিকেশনগুলো আগামীতে পুরো পৃথিবীকে শাসন করবে সেগুলো  স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রোমোট করার উদ্যোগ নিতে হবে। সেইসাথে স্থানীয় সফটওয়্যারগুলোকে  দেশে ব্যবহারে সহায়তা করার ব্যবস্থা করতে হবে। আর শেষের যে বিষয়টাবে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সেটা হলো, তাদের দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যাপক আকারে ভূমিকা রাখতে হবে। সেইসাথে একাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে আরো বেশি সমন্বয় তৈরি করতে হবে। যাতে ইউনিভার্সিটিগুলি থেকে যেসব স্টুডেন্টগুলো বের হয়ে আসে  তারা যেন আগে থেকে জানতে পারে যে ইন্ডাস্ট্রিতে কি ধরনের দক্ষ লোকের দরকার। তারা যাতে যেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। সেজায়গাটাতে তাদের বিশেষভাবে কাজের পরিকল্পনা করতে হবে।

বি.দ্র.বেসিস নির্বাচন ২০২১ নিয়ে সদস্যদের মতামত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করবে দৈনিক ডিজিটাল সময়। যারা এতে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী তাদেরকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভাবনা-চিন্তাগুলো ডিজিটাল সময়ের digitalsomoy@gmail.com এই ই-মেইলে পাঠাতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যাবে ০১৯৮৫ ৮৩৪১৪৪ এই মোবাইল নম্বরে।