টানা নয় কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবাপর টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগের সপ্তাহের শেষ চার কার্যদিবস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এমন টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে দরপতন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। রোববার ও সোমবার দরপতন হওয়ার পর মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে।
কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫০টির। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৩৯টির দাম কমেছে এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৭টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫৩টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৯টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭১৭ কোটি ৩২ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮০৫ কোটি ৩৯ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি টাকার। ২৩ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ব্যাংক এশিয়া, যমুনা ব্যাংক, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, লাভেলো আইসক্রিম, ঢাকা ব্যাংক এবং মালেক স্পিনিং।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।