প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যতো চ্যালেঞ্জই আসুক, সুস্থ ও সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে। তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাত একা নয়, বরং সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, "স্বাস্থ্য খাতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আমরা একত্রিত হয়েছি। জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে আমাদের প্রয়োজন দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সুসংগঠিত করতে হবে।"
তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায়, তার ৭১ শতাংশের মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ মৃত্যু ঘটে ৭০ বছরের আগেই, যা অকাল মৃত্যু হিসেবে বিবেচিত।
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় বা ‘আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার’ প্রায় ৬৯ শতাংশ, যার বড় অংশ ব্যয় হয় অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায়। ফলে সাধারণ মানুষ উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের চাপে পড়ছে, অনেক সময় সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়ছে। কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে পরিবারের সর্বোচ্চ আর্থিক সামর্থ্য পর্যন্ত খরচ করতে হয়, অনেক সময় বিদেশে চিকিৎসা করাতেও হয়, এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নই নয়, অসংক্রামক রোগ যেন কম হয় বা না হয়, সেজন্য সচেতনতা, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম জরুরি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের নিজ নিজ খাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।”
যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর করণীয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক সহযোগিতা এবং দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. ইউনূস। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।