বাংলাদেশ সফর ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হয়েছে: ইসহাক দার

digitalsomoy

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশ সফরকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ইসহাক দার জানান, বাংলাদেশে ৩৬ ঘণ্টার ব্যস্ত ও ফলপ্রসূ সফর সম্পন্ন হয়েছে। সফরের সময় তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য ও শুল্ক কমিশনের চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার। এছাড়া, সফরের সময় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের নেতারা, বুদ্ধিজীবী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, একাডেমিক, সুশীল সমাজ এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

ইসহাক দার উল্লেখ করেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও অর্থবহ ছিল। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “বিগত সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। বর্তমান সরকার চায় পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে।”

তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিক। আজকের বৈঠকে আমরা ভবিষ্যতের জন্য এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি করেছি। পারস্পরিক সম্মান, সমঝোতা এবং সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই।”

অমীমাংসিত বিষয়ে দুই দেশের অবস্থান একই কি না, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান পূর্ণভাবে তুলে ধরেছি। কিছু অগ্রগতি হয়েছে—দুই পক্ষ একমত হয়েছে যে এই বিষয়গুলো আলোচনা করে সমাধান করা প্রয়োজন, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি না হয়।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা চাই পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক হোক। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রেই আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন, এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই সম্পর্ক এগোচ্ছে।”

এদিকে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় ইসহাক দার উল্লেখ করেন, একাত্তর ইস্যুতে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ও ২০০২ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মোশাররফ হোসেন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তৌহিদ হোসেন এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় এবং বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি, তারা তাদের অবস্থান জানিয়েছে। একমত হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।”